বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে

প্রকাশঃ জুন ২৫, ২০১৬ সময়ঃ ৪:০৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৩২ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

asaduzzamankhanপুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “কয়েকজন আসামির সামনে মুখোমুখি করে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”

এসপি বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, বা তাকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এ প্রশ্নে মন্ত্রীর উত্তর, “এখনও বলার সময় হয়নি। শিগগিরই জানতে পারবেন।”

এদিকে বাবুল আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে তার স্বজনদের মধ্যে তৈরি হয়েছে সন্দেহ আর উদ্বেগ। তার বাবা ও শ্বশুর বলছেন, বাবুলের স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকে পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে এসেছে; কিন্তু এখন তারাও সহযোগিতা ‘করছে না’। বাবুল আক্তারকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে রাখা হয়েছে বলে শোনা গেলেও এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না পুলিশের কোনো কর্মকর্তা।

বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলছেন, শুক্রবার রাত ১টার দিকে তাদের বনশ্রীর বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে নিয়ে যায় খিলগাঁও থানার ওসি মঈনুল হোসেন ও মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, “আইজি সাহেব দেখা করতে বলেছেন বলে ওকে নিয়ে গেল। এরপর তার সাথে আর যোগাযোগ করতে পারছি না। যারা নিয়ে গেল তাদের সাথেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।”

ঢাকায় পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর ও আর নিজাম রোডের বাসার অদূরে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন। মোটর সাইকেলে করে আসা তিন হামলাকারী মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

চট্টগ্রামের পুলিশ বলে আসছিল, গত দুই বছরে চট্টগ্রামে জঙ্গি দমন অভিযানে বাবুলের ভূমিকার কারণে জঙ্গিদেরই সন্দেহের তালিকায় প্রথমে রেখেছেন তারা; সেভাবেই মিতু হত্যার তদন্ত করছেন তারা।

মিতু হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামে যে মামলা হয়েছে, বাবুল আক্তারই তার বাদী। সে কারণে প্রায়ই তাকে পুলিশের কার্যালয়ে যেতে হত বলে মোশাররফ হোসেন জানান।

তিনি বলেন, “আগেও ও রাতে গেছে। কিন্তু যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে এমন হয়নি। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না কেন? ফোন বাজছে, ধরছে না কেন? বাসায় দুই বাচ্চা কাঁদছে, মা তো আর নেই।”

এ বিষয়ে কথা বলতে খিলগাঁওয়ের ওসি এবং মতিঝিলের উপ কমিশনারকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকেও পাওয়া যায়নি।

স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় শ্বশুর বাড়িতেই থাকছিলেন এসপি বাবুল আক্তার। তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন অবসরে গিয়েছিলেন পুলিশের ওসি হিসেবে।  আর বাবা আবদুল ওয়াদুদ মিয়াও চাকরি করেছেন পুলিশে। শুক্রবার রাতে বনশ্রী থেকে যখন বাবুল আক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয়, তার বাবাও তখন ওই বাসায় ছিলেন।

আবদুল ওয়াদুদ বলেন, “সন্ধ্যায় অফিসার্স ক্লাবে একটা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে যাওয়ার পর বাবুল জানায়, আইজি সাহেবের সাথে দেখা করবে। দেখা করার পর অনুষ্ঠান হয়েই বাসায় আসে ওরা। ওসি সাহেবও (মঈনুল হোসেন) তখন সঙ্গে ছিলেন। রাত পৌনে ১টার দিকে সবাই বাসায় ফিরল। কিছুক্ষণ পর ডিসি সাহেব (আনোয়ার হোসেন) আসেন এবং আইজি সাহেব দেখা করতে বলেছেন জানিয়ে বাবুলকে নিয়ে যান।”

ওয়াদুদ মিয়া বলেন, “আমার ছেলের সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছি না। আগে ওসি সাহেব একবারেই ফোন ধরতেন, আমাদের নিরাপত্তার খোঁজ খবর নিতেন। এখন ফোনই ধরছেন না। ডিবি অফিসেও যোগাযোগ করেছি, কেউ কোনো সহযোগিতা করছে না; বলছে, উপরের অফিসাররা বলতে পারবে।”

পরে মাদকের অপব্যবহার ও পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ঢাকা ক্লাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “(মিতু হত্যার) ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা কনফিডেন্ট যে তাদের (দোষী) ধরতে সক্ষম হয়েছি।”

বাবুল আক্তারকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাবুল আক্তার একজন পুলিশ কর্মকর্তা। ওই এলাকার অনেককেই তিনি চেনেন, যাদের আটক করেছি তাদের কনফার্ম করার জন্য বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।”

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G